কম্পিউটার ভাইরাস হলো এক ধরনের ম্যালওয়্যার (ম্যালিশিয়াস সফটওয়্যার)। যা একটি কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং তা ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কাজ করে। এটি সাধারণত স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্যান্য ফাইল বা প্রোগ্রামে ছড়িয়ে পড়ে এবং সিস্টেমের কার্যকারিতা বিঘ্নিত করে।

Table of Contents

কম্পিউটার ভাইরাসের মূল বৈশিষ্ট্য

কম্পিউটার ভাইরাস সাধারণত অন্যান্য সফটওয়্যার বা ফাইলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রাখে এবং ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারে।

কম্পিউটারে ভাইরাস কিভাবে কাজ করে?

ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করার পর প্রথমেই কিছু নির্দিষ্ট ফাইল বা প্রোগ্রামে যুক্ত হয়। এর ফলে এটি অন্যান্য ফাইল বা প্রোগ্রামকে সংক্রামিত করতে শুরু করে। সাধারণত, ভাইরাসগুলো ব্যবহারকারীর অজান্তে চালু হয় এবং সিস্টেমের পারফরম্যান্স কমিয়ে দেয়।

কম্পিউটার ভাইরাস কতপ্রকার হয়ে থাকে?

কম্পিউটার ভাইরাস প্রধানত তিন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন-

বুট সেক্টর ভাইরাসঃ

বুট সেক্টর ভাইরাসগুলো সরাসরি হার্ড ড্রাইভ ডিস্কের বুট সেক্টরকে সংক্রামিত করে। কম্পিউটার চালু হওয়ার সময়ই এই ভাইরাস কার্যকর হয় এবং পুরো সিস্টেমে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

ফাইল ইনফেক্টর ভাইরাসঃ

এই ধরনের ভাইরাস সাধারণত .exe ফাইলগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করে। কোনো নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম চালু হলে, এই ভাইরাস ফাইলগুলোকে সংক্রামিত করে এবং অন্যান্য ফাইলেও ছড়িয়ে পড়ে।

ম্যাক্রো ভাইরাসঃ

ম্যাক্রো ভাইরাস সাধারণত অফিস প্রোগ্রামিং ফাইলের ম্যাক্রোতে লুকিয়ে থাকে। যেমন- মাইক্রোসফট ওয়ার্ড বা এক্সেল ইত্যাদী। এই ভাইরাসগুলো ডকুমেন্ট ফাইলের সঙ্গে সংযুক্ত হয় এবং যখনই ডকুমেন্ট খোলা হয়, এটি ভাইরাস ছড়াতে শুরু করে।

কম্পিউটারে ভাইরাস কিভাবে যুক্ত হয়?

ইমেইল এটাচমেন্টঃ

ইমেইলের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানো খুব সাধারণ একটি পদ্ধতি। ক্ষতিকারক ফাইল বা লিংক সংযুক্ত করে ইমেইল পাঠানো হয়। ইমেইল খোলার পর ভাইরাসটি সিস্টেমে অটো প্রবেশ করে।

সফটওয়্যার ডাউনলোডঃ

অনেক সময় অনলাইনে অজানা বা অবিশ্বস্ত সাইট থেকে সফটওয়্যার ডাউনলোড করার ফলে ভাইরাস প্রবেশ করে। যেমন ক্রাক সফটওয়্যার, নাল সফটওয়্যার ইত্যাদী।

ইউএসবি ড্রাইভ ও অন্যান্য ডিভাইসঃ

ইউএসবি ড্রাইভ বা অন্যান্য বহিরাগত ডিভাইস সংযুক্ত করার মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটতে পারে। বিশেষত যদি ডিভাইসটি আগে থেকেই সংক্রামিত থাকে।

কম্পিউটার ভাইরাসের আক্রমনের প্রভাবে কি হয়?

সিস্টেমের গতি কমে যাওয়াঃ

ভাইরাসে আক্রান্ত কম্পিউটারে সাধারণত সিস্টেমের গতি কমে যায়। প্রোগ্রামগুলো ধীরগতিতে চালু হয় এবং বারবার ফ্রিজ হয়ে যায়।

অপ্রত্যাশিত বিজ্ঞাপনঃ

অনেক ভাইরাস সিস্টেমে অ্যাডওয়্যার হিসেবে কাজ করে। যেটা আপনার ব্রাউজারে অপ্রত্যাশিত বিজ্ঞাপন বা পপ-আপ প্রদর্শন করে।

ডেটা হারিয়ে যাওয়া ও এনক্রিপটেড হয়ে যাওয়াঃ

ভাইরাসের কারণে ফাইল ডিলিট হয়ে যেতে পারে বা আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি ডেটাগুলো এনক্রিপটেড হয়ে যায়।

কম্পিউটার ভাইরাস একটি বড় সমস্যা, যা আমাদের সিস্টেম এবং ব্যক্তিগত ডেটাকে বিপন্ন করতে পারে। সতর্কতা অবলম্বন এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে কম্পিউটার পরিচালনা করাই একমাত্র কাম্য।

জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী!

ভালোমানের অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার এবং সন্দেহজনক লিংক এড়িয়ে চলা উচিত।

কীভাবে বুঝব আমার কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে?

না, কম্পিউটার ভাইরাস উইন্ডোজ, ম্যাক এবং লিনাক্স সব ধরনের অপারেটিং সিস্টেমে আক্রমণ করতে পারে।

হ্যাঁ, কম্পিউটার ভাইরাস সাধারণত ক্ষতিকারক এবং সিস্টেমের কার্যকারিতা নষ্ট করে।

Share.
Exit mobile version